জাতিসংঘ অধিবেশনে ২২ সেপ্টেম্বর ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী

খবরটিভি ডেস্কঃ জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮-তম অধিবেশনের উচ্চ পর্যায়ের বিতর্ক পর্বে যোগ দিতে আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর সাধারণ বিতর্ক পর্বে বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দিবেন প্রধানমন্ত্রী। 

 

বৈশ্বিক শান্তি, সমৃদ্ধি, অগ্রগতি এবং একটি টেকসই ভবিষ্যতের জন্য সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ২০৩০ এজেন্ডা এবং এর টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন সংক্রান্ত বিষয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে গুরুত্ব পাবে। জাতিসংঘ অধিবেশনের সাইড লাইনে রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে একটি ইভেন্টে অংশ নিবেন প্রধানমন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় আয়োজিত অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেন। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিতে পারেন, যার মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে সেসকল দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা করা যায়। এর মধ্যে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী এবং শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি রয়েছেন। সফর চলাকালীন জাতিসংঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক/আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার প্রধানরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে পারেন। এদের মধ্যে জাতিসংঘের মহাসচিব, জাতিসংঘের শরনার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার, জাতিসংঘের মহাসচিবের গণহত্যা বিষয়ক উপদেষ্টা, সদ্য নির্বাচিত আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার মহাপরিচালক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক এবং আন্তর্জাতিক এটমিক এনার্জি এজেন্সির মহাপরিচালক উল্লেখযোগ্য।

 

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন অগ্রযাত্রা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যখাতে সাফল্য ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোকপাত করবেন। পাশাপাশি, বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা, নিরাপদ অভিবাসন, বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক সংকট, জলবায়ু ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত বিষয়সমূহ তাঁর বক্তব্যে উঠে আসবে। পাশাপাশি প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও সাধারণ বিতর্ক পর্ব চলাকালীন বেশ কিছু উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে যেখানে প্রধানমন্ত্রী অংশগ্রহণ করতে পারেন।  

 

রোহিঙ্গা ইস্যূতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার ষষ্ঠ বছরে পদার্পণ করেছি কিন্তু এপর্যন্ত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিকভাবে গৃহীত পদক্ষেপ আশানুরূপ কোন সমাধান দিতে পারেনি। বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন এক নম্বর অগ্রাধিকার ইস্যু। এই বক্তব্যই আবারও বিশ্ববাসীর কাছে পৌছে দিতে ‘হাই লেভেল সাইড ইভেন্ট অন রোহিঙ্গা ক্রাইসিস’ শীর্ষক সাইড ইভেন্ট আয়োজন করা হয়েছে যেখানে প্রধানমন্ত্রী বক্তব্য দিতে পারেন। এই ইভেন্টে কানাডা, গাম্বিয়া, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সহ আয়োজক।

 

তিনি আরো বলেন, এ বছর স্বাস্থ্য বিষয়ক কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রী এসব বৈঠকে অংশ নিবেন। প্রধানমন্ত্রীর সুযোগ্য নেতৃত্বে সবার জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ এবং সাম্প্রতিককালে করোনা অতিমারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ যে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে এই বৈঠকগুলোর মাধ্যমে তা বিশ্বদরবারে তুলে ধরা হবে। নারী ক্ষমতায়ন এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বদরবারে রোলমডেল হিসেবে সমাদৃত হয়েছে। এবারের আয়োজনেও প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে একাধিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশের অর্জন এবং প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবেন।